Title : বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন
Photos
Description : `মানসিক স্বাস্থ্য একটি সার্বজনীন মানবাধিকার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নগরীতে নানা আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপিত হলো ৩১তম বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২৩। মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় অধিপরামর্শমূলক সংস্থা মেন্টাল হেলথ এডভোকেসি এসোসিয়েশন (মা/MHAA) ও নোবেল নার্সিং কলেজ-এর যৌথ উদ্যোগে এবং বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী উন্নয়ন সংস্থা ইউনাইট থিয়েটার ফর সোশাল অ্যাকশন (UTSA/উৎস) ও ডিয়াকোনিয়া’র সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সকাল ১০ টায় নগরীর মির্জাপুলস্থ সড়কড থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে পাঁচলাইশ এলাকা প্রদক্ষিণ করে সুগন্ধা আবাসিক এলাকাস্থ নোবেল নার্সিং কলেজ ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন মেন্টাল হেলথ এডভোকেসি এসোসিয়েশন (মা/ MHAA)-এর সভাপতি শরীফ জহির উদ্দীন মো. আবু রায়হান। সকাল ১১টায় নোবেল নার্সিং কলেজ মিলনায়তনে দিবসের প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মানবাধিকার কর্মী ও ইলমা’র প্রধান নির্বাহি জেসমিন সুলতানা পারু, নোবেল নার্সিং কলেজের অধ্যাপক নাহিদ হাসিম, অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ আল মামুন, উপাধ্যাক্ষ লক্ষী দে, গণমাধ্যম কর্মী ফারুক তাহের। উৎস’র সহ-সভাপতি ও নোবেল নার্সিং কলেজে এর চেয়ারম্যান ডা. কাহানা বেগম-এর সভাপতিত্বে ও উৎস’র কর্মসূচি সমন্বয়কারী মুহাম্মদ শাহ্ আলম সঞ্চালিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মোস্তফা কামাল যাত্রা ও দিবসের প্রতিপাদ্য নিয়ে নিবন্ধ উপস্থাপন করেন উৎস’র প্রোগ্রাম অফিসার রীপা পালিত। আলোচনা সভায় বক্তাগণ বলেন, ‘২০১৮-১৯ সালের মানসিক স্বাস্থ্য জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ১৭% বা ২ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নানা ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত এবং ১০০ জনের মধ্যে ৭ জন ভুগছেন বিষণœতায়। অথচ অবাক করা বিষয় হল, এর ৯২%-ই রয়েছেন চিকিৎসার আওতার বাইরে। অন্যদিকে ১৩.৬% শিশুও মানসিক রোগে ভুগছে বলে জরিপে উঠে এসেছে, যাদের ৯৪% কোন চিকিৎসা পাচ্ছে না। যেকোনো শারীরিক রোগকে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখলেও মানসিক সমস্যাকে বাংলাদেশে এখনও ঠাট্টা, বিদ্রæপ বা হালকা বিষয় হিসেবে গণ্য করা হয়। আমরা শরীরের সুস্থতা নিয়ে যতটা উদ্বিগ্ন থাকি এবং যতটা নজর রাখি মনের সুস্থতার ব্যাপারে আমরা ততটাই উদাসীন। নিবিড় সত্য হচ্ছে, সুস্থ শরীর ছাড়া যেমন সুস্থ মন সম্ভব নয় তেমনি সুস্থ মন ছাড়া সুস্থ শরীর, সুস্থ জীবন কিছুতেই সম্ভব নয়।’ অনুষ্ঠানে সমন্বিত মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য এবং সকলের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিন্মোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের উপর তাগিদ দেন: -জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন-এর ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যকে বিশেষভাবে গুরুত্ব প্রদান করা দরকার। -সরকারি দায়বদ্ধতার পাশাপাশি সাধারণ জনগণ, উন্নয়ন সংস্থা এবং বেসরকারি সংস্থাসমূহকেও এ বিষয়ে উদ্যোগী ভ‚মিকা পালন করতে হবে। -মাঠ পর্যায়ে যারা স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকেন- কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসক, মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট, ফার্মাসিস্ট, নার্স, স্বাস্থ্য সহকারি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সের চিকিৎসক ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিলে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যায় এর অর্ন্তভ‚ক্তি সফল ও বাস্তবানুগ হতে পারে। -জন-সচেতনতা বাড়ানো, শিক্ষার প্রসার ঘটানো এবং সামাজিক মর্যাদাহানি যাতে না ঘটে তার জন্য প্রচার-প্রচারনা চালানো। -উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান এবং উন্নত সেবা দেয়ার জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা। -আইন এবং নীতিমালা কার্যকর বাস্তবায়ন করা যাতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ব্যক্তিদের মানবাধিকারগুলির সঠিক সুরক্ষা হয়। -মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ব্যক্তিদের মানবাধিকার এবং মানসিক স্বাস্থ্য সেবাকে সবসময় পর্যবেক্ষন করা। -মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য এবং উন্নয়ন নীতিমালায় অর্ন্তভূক্তিকরন। -মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণের জন্য পৃথক ও স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তোলা। -মানসিক স্বাস্থ্যকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে একাডেমিক বিষয় হিসেবে অর্ন্তভূক্তি করা।